শিরোনাম :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু গোদাগাড়ীতে মজুত করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দৌঁড়-ঝাঁপ গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার!
গোদাগাড়ীতে ভক্ত সমাবেশ ছাড়াই শেষ হলো খেতুরীধামের মহোৎসব

গোদাগাড়ীতে ভক্ত সমাবেশ ছাড়াই শেষ হলো খেতুরীধামের মহোৎসব

গোদাগাড়ীতে ভক্ত সমাবেশ ছাড়াই শেষ হলো খেতুরীধামের মহোৎসব
গোদাগাড়ীতে ভক্ত সমাবেশ ছাড়াই শেষ হলো খেতুরীধামের মহোৎসব

অনলাইন ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে হিন্দু ধর্মাবলাম্বীদের মোট ছয়টি ধাম রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটিই ভারতবর্ষে। আর একটি মাত্র বাংলাদেশে। সেটি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার খেতুর গ্রামে। যুগ যুগ ধরে দুর্গাপূজার পর বৈষ্ণব ধর্মের অনুসারীরা অহিংসার মহান সাধক ঠাকুর নরোত্তম দাসের কৃপা লাভের আশায় খেতুরীধামে বছরে একবার মিলিত হয়ে থাকেন। তবে করোনা মহামারীর কারণে এ বছর ভক্ত সমাবেশ ছাড়াই শেষ হলো মহোৎসব। প্রায় পাঁচ শতাব্দির ইতিহাসে এই প্রথম ভক্তদের সমাবেশ হলো না খেতুরীধামে। শুধু ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতারম মধ্য দিয়ে উৎসব উদযাপন হয়েছে।

এ বছর সমাবেশ হবে না তা সংবাদ সম্মেলন করে আগেই জানিয়েছে শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গদেব ট্রাস্ট বোর্ড। সেই সংবাদ সম্মেলন থেকে এ বছর ভক্তদের না আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। তারপরও কেউ কেউ এসেছেন। পুলিশ যথাসাধ্য চেষ্টা করে তাদের ফেরত পাঠিয়েছে। মন্দিরের সবগুলো ফটক বন্ধ রেখেই হাতেগোনা কিছুসংখ্যক মানুষ ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন। তবে শুক্রবার মহোৎসব শেষ হলে মন্দিরের ফটকগুলো খুলে দেয়া হয়। তখন দূর-দুরান্ত থেকে আসা অনেকেই মন্দিরে পূজা অর্চনা করেন। তবে তাদের সংখ্যা খুব কমই।

গত বুধবার সন্ধ্যায় শুভ অধিবাসের মধ্য দিয়ে তিরোভাব তিথির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বৃহস্পতিবার অরুণোদয় থেকে অষ্ট প্রহরব্যাপী তারক ব্রাক্ষনাম সংকীর্ত্তণ এবং শুক্রবার সকালে দধি মঙ্গল, দ্বি-প্রহরে ভোগ আরতি ও মাহান্ত বিদায়ের মধ্যে দিয়ে মহোৎসব শেষ হয়।

খেতুরীধামের ব্যবস্থাপক গোবিন্দ চন্দ্র পাল বলেন, ভক্তদের জন্য আমাদের মন কেঁদেছে। তারপরও এবার তাদের আসতে বারণ করেছি। তিন দিন মন্দিরের ফটক বন্ধ রেখেই ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালিত হয়েছে। শুক্রবার অনুষ্ঠান শেষে হয়েছে। তাই দূর-দুরান্ত থেকে অল্প কিছু যেসব ভক্ত চলে এসেছিলেন তাদের ঢুকতে দেয়া হয়েছে। সামনে বছর আশা করছি করোনার সংকট থাকবে না। তখন আবার সবাই আসতে পারবেন। আবারও বড় উৎসব হবে।

প্রসঙ্গত, ১৫৩১ খ্রিস্টাব্দে ঠাকুর নরোত্তম দাস তৎকালীন গড়েরহাট পরগণার অন্তর্গত বর্তমান রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পদ্মা তীরের গোপালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব পার করে ঠাকুর নরোত্তম দাস বৃন্দাবন অভিমুখে যাত্রা করেন। সেখানে নিখিল বৈষ্ণবকুল লোকনাথ গোস্বামীর শিষ্যত্ব গ্রহণ করে দীক্ষা লাভ করেন। পরে তিনি খেতুরে ফিরে আসেন। খেতুর মন্দিরে গড়ে তোলেন স্থাপনা। এরপর তিনিই প্রথমে এখানে এ উৎসবের আয়োজন করেন। ভক্তরা দূর-দূরান্ত থেকে তার কাছে এসে দীক্ষা গ্রহণ করতে শুরু করেন।

১৬১১ খ্রিস্টাব্দের কার্তিকী কৃষ্ণা পঞ্চমী তিথিতে ঠাকুর নরোত্তম দাস নিত্তলীলায় প্রবেশের মানসে গঙ্গাস্নানের বাসনা প্রকাশ করেন। শিষ্যরা তাকে গঙ্গাজলে নিয়ে গেলে নিজের দেহকে অর্ধনিমজ্জিত করে প্রিয় শিষ্য গঙ্গানারায়ণ ও রামকৃষ্ণকে আদেশ করেন তার দেহ মার্জন করতে। গুরু আজ্ঞায় নরোত্তমের ওই দুই শিষ্য তার দেহ মার্জন করতে থাকলে পুরো দেহ এক সময় সাদা দুধের মতো তরল পদার্থে পরিণত হয়ে গঙ্গাজলে মিলিত হয়ে যায়। এরপর থেকেই দুর্গাপূজার পর বৈষ্ণব ধর্মের অনুসারীরা অহিংসার এই মহান সাধকের কৃপা লাভের আশায় খেতুরীধামে বছরে একবার মিলিত হয়ে থাকেন। এটি হয়ে থাকে বাংলাদেশে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় সমাবেশ। তবে এই প্রথম সেই সমাবেশ হলো না। সোনালী সংবাদ।

মতিহার বার্তা ডট কমনভেম্বর, ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply